ঢাকা, ৩ ফেব্রুয়ারি : বাংলাদেশের প্রখ্যাত বংশীবাদক ওস্তাদ ক্যাপ্টেন আজিজুল ইসলাম-এর ৮০তম জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত একক বংশী বাদন অনুষ্ঠান জাতীয় যাদুঘরের প্রধান মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়। পথিকৃৎ ফাউন্ডেশন ও সংস্কৃতি বিকাশ কেন্দ্রের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এই বিশেষ সন্ধ্যায় বিশিষ্ট শিল্পী ওস্তাদ ক্যাপ্টেন আজিজুল ইসলাম তাঁর অনবদ্য বংশীবাদনে দর্শকদের মোহিত করেন।
বাংলাদেশ বাশরী ফাউন্ডেশন - এর পক্ষ থেকে ওস্তাদ আজিজুল ইসলামকে শ্রদ্ধা নিবেদন করে একটি চমৎকার পরিবেশনা দিয়ে অনুষ্ঠানটি শুরু হয়। এরপর অধ্যাপক লিয়াকত আলি’র এর সভাপতিত্বে (প্রতিষ্ঠাতা, সংস্কৃতি বিকাশ কেন্দ্র এবং সভাপতি, পথিকৃৎ ফাউন্ডেশন) অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ এবং বিশেষ অতিথি নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রধান শিরিন পারভীন হক এবং বিশিষ্ট চলচ্চিত্র ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব মসিহউদ্দিন শাকের মঞ্চে আসন গ্রহন করেন। অতিথিরা তাঁদের বক্তব্যে ওস্তাদ আজিজুল ইসলামকে তাঁর ৮০তম জন্মবার্ষিকীর আন্তরিক শুভেচ্ছা জানান এবং তাঁর দীর্ঘ সংগীতযাত্রার প্রশংসা করেন। তাঁরা উল্লেখ করেন, শাস্ত্রীয় সংগীতের চর্চা ও প্রচারে ওস্তাদজি যে অবদান রেখেছেন, তা অনন্য ও অনুকরণীয়। অস্তাদ আজিজুল ইসলাম কে ফুলেল শুভেছা জানান উপস্থিত দেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনের বিশিষ্টজন, সাংবাদিক, শিল্পী ও সংগীতপ্রেমীরা।
সবশেষে বংশীবাদক ওস্তাদ ক্যাপ্টেন আজিজুল ইসলাম মূল অনুষ্ঠান শুরু করেন রাগ দরবারি কানাড়া দিয়ে। এছাড়াও তিনি রাগ হংসধ্বনি ও রাগ ঝিঁনঝটি পরিবেশন করেন, যা উপস্থিত দর্শক-শ্রোতাদের বিমোহিত করে। তাঁর সুললিত সুরের মূর্ছনায় মিলনায়তন আবিষ্ট হয়ে ওঠে, শ্রোতারা গভীর মনোযোগ ও আবেগ নিয়ে এই সংগীত সন্ধ্যা উপভোগ করেন। অনুষ্ঠানটি বংশীবাদনের এক অনন্য সন্ধ্যায় পরিণত হয়, যা শ্রোতাদের হৃদয়ে দীর্ঘদিন স্মরণীয় হয়ে থাকবে। বংশী পরিবেশনের সঙ্গে শিল্পীর সাথে তবলায় ছিলেন বিশ্বজিৎ নট্ট এবং তানপুরায় ছিলেন সাইফুল ইসলাম। পুরো অনুষ্ঠানের উপস্থাপনায় ছিলেন রেজয়ানুল কবির সুমন ও মাশফিদা আক্তার মালা।
উল্লেখ্য, ওস্তাদ আজিজুল ইসলাম বাংলাদেশের একজন স্বনামধন্য বাঁশিবাদক, যিনি শাস্ত্রীয় সংগীতে অসামান্য অবদান রেখেছেন। ১৯৪৪ সালে রাজবাড়ীতে জন্মগ্রহণকারী এই গুণী শিল্পী নাবিক হিসাবে কর্মজীবন শুরু করলেও পরবর্তীতে সংগীতের প্রতি গভীর অনুরাগ থেকে পুরোপুরি শাস্ত্রীয় সংগীতে নিজেকে নিবেদন করেন। তিনি ওস্তাদ বিলায়েত আলী খান, বাহাদুর খান এবং দেবেন্দ্র মুরদেশ্বরের কাছে তালিম নেন। ২০১৭ সালে তিনি বাংলাদেশের সর্বোচ্চ পুরস্কার একুশে পদক অর্জন করেন। এছাড়াও তিনি বাংলা একাডেমি সম্মাননা (২০২১), সংগীত পিয়াসী পুরস্কার, পল হ্যারিস ফেলো পুরস্কার, চ্যানেল আই মিউজিক অ্যাওয়ার্ড এবং সাহিত্য একাডেমি পুরস্কার সহ আরও বিভিন্ন সম্মাননায় ভূষিত হন। খরব প্রেস বিজ্ঞপ্তির।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Suprobhat Michigan